সূচিপত্র / অধ্যায় 6: কোয়ান্টাম ক্ষেত্র
শক্তি-সুতো তত্ত্ব (EFT)-এ আলো হলো “শক্তির সমুদ্র” জুড়ে ছুটে চলা এক ধরনের টেনসর-বিকৃতি-তরঙ্গের গুচ্ছ। কোনো বিকৃতি স্থানীয় টেনসর-সীমা অতিক্রম করলেই কেবল তা স্থিতিশীল গুচ্ছে বাঁধা হয়; একইভাবে, গ্রাহক-পক্ষের কাঠামো তার নিজস্ব শোষণ-সীমা না পারা পর্যন্ত গুচ্ছটি গ্রহণ করতে পারে না। তাই দৃশ্যমান “কণিকাধর্ম” মানে আলো দানা-দানা কণা নয়; বরং নির্গমন ও শোষণ—উভয়ই—অখণ্ড অংশে ঘটে, যা সীমা ঠিক করে দেয়। আর উৎস ও গ্রাহকের মধ্যবর্তী পথজুড়ে যা কিছু ঘটে, তা তরঙ্গের নিয়ম—প্রসারণ, পর্যায়, হস্তক্ষেপ—অনুসারেই ঘটে। ফলে “তরঙ্গ” পথ দেখায়, আর “সীমা” অংশ নির্ধারণ করে।
I. ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়া: তিনটি সীমা, তিন দফা বিযুক্তকরণ
একটি “আসা-যাওয়া” সম্পূর্ণ করতে তিনটি ধাপ কাজ করে; এই তিন সীমাই ব্যাখ্যা করে কেন শক্তি লেনদেন অংশে-অংশে হয়।
- উৎস-সীমা: গুচ্ছ-গঠন সীমা
উৎসের ভেতরে টেনসর ও পর্যায় জমা হয় ও রূপ নেয়। যখন মুক্তি-সীমা ছোঁয়া পড়ে, সঞ্চিত শক্তি একটি সমসঙ্গত খোলে বাঁধা পুরো গুচ্ছ হয়ে বেরিয়ে যায়। সীমার নিচে টপকানো ঝরঝর নেই; সীমা ছোঁয়ামাত্রই পূর্ণ গুচ্ছ নির্গত হয়। ফলে নির্গমন “অংশে” ঘটে। - পথ-সীমা: প্রসারণ-সীমা
শক্তির সমুদ্র সব বিকৃতিকে “সবুজ সংকেত” দেয় না। যথেষ্ট সমসঙ্গতি-সম্পন্ন, স্বচ্ছতা-জানালার (ফ্রিকোয়েন্সি-রেঞ্জ) মধ্যে, এবং স্বল্প প্রতিবন্ধী পথ-এর দিক মেলানো বিকৃতিই স্থিত গুচ্ছ হয়ে দূরে যেতে পারে। বাকিগুলো উৎসের কাছেই তাপায়িত, বিচ্ছুরিত বা পটভূমির শব্দে ডুবে যায়। - গ্রাহক-সীমা: ক্লোজার-সীমা
ডিটেক্টর বা বাঁধা ইলেকট্রনকে উপাদানের দরজা পেরোতে হয়—তবেই শোষণ/উৎক্ষেপ সম্পূর্ণ হয়। দরজাটি অখণ্ড: না হলে কিছুই নয়, হলে একটি পূর্ণ অংশ। ফলে শনাক্তকরণ ও শক্তি-বিনিময় “একবারে এক অংশ” করেই ঘটে।
সংক্ষেপে: গুচ্ছ-গঠন সীমা নির্গমনকে বিযুক্ত করে; প্রসারণ-সীমা নির্ধারণ করে কে দূরে যাবে; ক্লোজার-সীমা শোষণকে বিযুক্ত করে। এই সীমা-শৃঙ্খল একই ছবিতে তরঙ্গের পথচলা আর অংশ-গণনাকে একত্রে বসায়।
II. দুইটি ধ্রুপদি পরীক্ষাকে সীমা-শৃঙ্খলে নতুন করে দেখা
- আলোক-বিদ্যুৎ প্রভাব: রঙে সীমা, অপেক্ষা নেই, তীব্রতা বদলায় “সংখ্যা”
ইতিহাসসূত্র: ১৮৮৭-এ হার্ট্জ দেখেন অতিবেগুনি আলো স্ফুলিঙ্গ বাড়ায়। ১৯০২-এ লেনার্ড তিন নিয়ম নথিবদ্ধ করেন: রঙ-সীমা আছে; আলো পড়তেই অপেক্ষাহীন ইলেকট্রন বেরোয়; আলো-তীব্রতা বাড়লে ইলেকট্রনের সংখ্যা বাড়ে, কিন্তু প্রতি ইলেকট্রনের শক্তি বদলায় না। ১৯০৫-এ আইনস্টাইন বিচ্ছিন্ন শক্তি-অংশ দিয়ে ব্যাখ্যা দেন; ১৯১৪–১৯১৬-এ মিলিকান উচ্চ-নির্ভুলতায় যাচাই করেন।
শক্তি-সুতো তত্ত্ব অনুযায়ী:
- “এক-একটা” কেন: দুই প্রান্তেই সীমা-বিযুক্তকরণ—উৎসে পূর্ণ গুচ্ছ ছাড়া হয়, গ্রাহকে পূর্ণ অংশ ছাড়া ক্লোজার নয়। মাঝের পথ পুরোপুরি তরঙ্গীয়; লেনদেনের মুহূর্তে অংশ-গণনা।
- তীব্রতা বদলায় হার, আয়তন নয়: তীব্রতা ঠিক করে এককে সময়ে কত গুচ্ছ বেরোবে—তাই ধারা (কারেন্ট) তীব্রতার সঙ্গে বাড়ে; কিন্তু প্রতি অংশের শক্তি বাঁধা রঙে, তীব্রতায় নয়।
- অপেক্ষা নেই: ধীরে ধীরে নয়; যে গুচ্ছ সীমা পারার যোগ্য, সে এলেই তাৎক্ষণিক ক্লোজার হয়।
- রঙে সীমা: বাঁধা ইলেকট্রনকে বেরোতে হলে উপাদানের দরজা পার হতে হয়। একটি গুচ্ছের “ঘুষি” আসে উৎসের ছন্দ—অর্থাৎ রঙ/ফ্রিকোয়েন্সি—থেকে। রঙ যদি বেশি লাল হয়, এক অংশ দরজায় টিকতে পারে না; শুধু আলো বাড়ালেই কাজ হয় না।
- কম্পটন বিচ্ছুরণ: এক অংশ, এক ইলেকট্রন, এক দফা
ইতিহাসসূত্র: ১৯২৩-এ কম্পটন প্রায়-মুক্ত ইলেকট্রনে একরঙা এক্স-রে ফেলেন; মাপেন—মুচ্রায় (কোণ) যত বড়, আলো তত লালচে (কম ফ্রিকোয়েন্সি)। তিনি এটিকে এক-এক লেনদেন হিসেবে পড়েন; ১৯২৭-এ নোবেল পান।
শক্তি-সুতো তত্ত্ব অনুযায়ী:
- তরঙ্গই ফল সাজায়: ঘটনাটির আগে-পরে গুচ্ছের প্রসারণ ও পর্যায় তরঙ্গ-বিধি মেনে চলে; বিযুক্ততা দেখা দেয় কেবল লেনদেনের ক্ষণে।
- বিচ্ছুরণ বিযুক্ত: গ্রাহক-দরজা প্রতি ক্লোজারেই একটি পূর্ণ অংশ বাধ্যতামূলক করে—এক অংশ দুই ইলেকট্রনে ভাগ হয় না।
- এক-অংশের লেনদেন: একটি টেনসর-গুচ্ছ এমন ইলেকট্রনিক উপ-কাঠামোর সাথে যুক্ত হয়, যার দরজা খুলতে পারে; তারপর এক-এক ক্লোজারে শক্তি-ভরবেগ ছেড়ে দেয়। ফলে বিচ্ছুরিত আলো লালদিকে সরছে; কোণ যত বড়, ছাড় তত বেশি।
III. সীমা-শৃঙ্খলের ফল: সব বিকৃতি দূর-আলো হয় না
অনেক “সঙ্কেত” উৎসেই নিভে যায় বা নিকট-ক্ষেত্রে থেমে যায়, প্রসারণ-সীমার কারণে—
- সমসঙ্গতি অপ্রতুল: গুচ্ছ জন্মেই ভেঙে যায়; স্থিত গুচ্ছ হয় না।
- জানালায় না-মেলা: ফ্রিকোয়েন্সি তীব্র শোষণ-ব্যান্ডে পড়ে; অল্প পথেই নিভে যায়।
- চ্যানেল বেমানান: স্বল্প-প্রতিবন্ধী পথ মেলে না বা দিক সঠিক নয়—শক্তি দ্রুত ক্ষয় হয়।
যে সঙ্কেত দূরে যায়, তাকে একযোগে তিনটিই মানতে হয়: ভালো গুচ্ছ-গঠন, স্বচ্ছতা-জানালা মেলা, চ্যানেল-সামঞ্জস্য।
IV. বিদ্যমান তত্ত্বের সাথে মিল-অমিল
- কোয়ান্টাম-সঙ্গতি: “এক অংশের শক্তি ফ্রিকোয়েন্সির সাথে স্কেল করে”—এই কথা অক্ষুণ্ণ। শক্তি-সুতো তত্ত্ব উৎসের গুচ্ছ-গঠন সীমা ও গ্রাহকের ক্লোজার-সীমা দিয়ে বিযুক্ততার উৎস ব্যাখ্যা করে; নতুন কোনো সত্তা ধরতে হয় না।
- কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিক্স-এর সাথে সামঞ্জস্য: আলোকে ক্ষেত্র-কোয়ান্টাম ধরে গণনা করা পদ্ধতি অপরিবর্তিত। শক্তির সমুদ্র প্রসারণ-সীমা ও পর্যায় নিয়ন্ত্রণ করে; সুতো ও উপাদান সীমা ও ক্লোজার জোগায়—এ এক বাস্তব ভিত্তি-নকশা।
- ধ্রুপদি তরঙ্গ-সঙ্গতি: হস্তক্ষেপ ও ব্যতিচার তরঙ্গঘটিত। শক্তি-সুতো তত্ত্ব বলছে: তরঙ্গ পথ গড়ে; সীমা লেনদেনকে অংশে বেঁধে দেয়—দুটি দিক পাশাপাশি সত্য।
V. মূখ্য কথাগুলি
- আলো তরঙ্গ-গুচ্ছ হিসেবে শক্তির সমুদ্রে তরঙ্গ-বিধি মেনে ছুটে ও হস্তক্ষেপ করে।
- বিযুক্ততা (“এক-একটি”) আসে সীমা থেকে: উৎসে গুচ্ছ-গঠন, গ্রাহকে ক্লোজার—ফলে নির্গমন-শোষণ অংশে-অংশে।
- আলোক-বিদ্যুৎ প্রভাব গ্রাহক-পক্ষের কঠিন সীমা দেখায়: রঙ ঠিক করে একটি অংশ দরজা পারবে কি না; তীব্রতা বদলায় শুধু অংশের হার, প্রতি অংশের শক্তি নয়।
- কম্পটন বিচ্ছুরণ দেখায় এক অংশ–এক ইলেকট্রন-এর জ্যামিতি: কোণ যত বড় → শক্তি ত্যাগ তত বেশি → লাল সরণ তত বেশি।
- সব বিকৃতি “দূরগামী আলো” হয় না: কেবল ভালো গুচ্ছ, সঠিক জানালা, মেলা চ্যানেল—এই তিন শর্ত পূরণ করলেই দূরে যায়; অন্যথায় উৎসের কাছেই নিভে যায়।
স্বত্বাধিকার ও লাইসেন্স (CC BY 4.0)
স্বত্বাধিকার: অন্যথা উল্লেখ না থাকলে, “Energy Filament Theory” (পাঠ্য, সারণি, চিত্র, প্রতীক ও সূত্র)‑এর স্বত্বাধিকার লেখক “Guanglin Tu”‑এর।
লাইসেন্স: এই কাজটি Creative Commons Attribution 4.0 International (CC BY 4.0) লাইসেন্সের অধীনে বিতরণ করা হয়। যথাযথ স্বীকৃতির শর্তে বাণিজ্যিক বা অ‑বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কপি, পুনঃবিতরণ, অংশবিশেষ ব্যবহার, রূপান্তর ও পুনঃপ্রকাশ করা যাবে।
প্রস্তাবিত স্বীকৃতি বিন্যাস: লেখক: “Guanglin Tu”; কর্ম: “Energy Filament Theory”; উৎস: energyfilament.org; লাইসেন্স: CC BY 4.0.
প্রথম প্রকাশ: 2025-11-11|বর্তমান সংস্করণ:v5.1
লাইসেন্স লিংক:https://creativecommons.org/licenses/by/4.0/