সূচিপত্র / অধ্যায় 5: অণুপার্টিকল (মাইক্রোস্কোপিক কণিকা)
আধুনিক পদার্থবিদ্যা পারস্পরিক ক্রিয়া ও পরিমাপ নির্ভুলভাবে বর্ণনা করে, কিন্তু কণিকা “কিভাবে গড়ে ওঠে”—এই ধারাবাহিক গল্পটি প্রায়ই অস্পষ্ট থাকে। এই অংশে আমরা শক্তি-সুতো তত্ত্ব (EFT)-এর দৃষ্টিতে পদার্থগত উপাদান ও প্রক্রিয়াভিত্তিক একটি অবিচ্ছিন্ন ব্যাখ্যা দিই—কেন স্থিতিশীল কণিকা একদিকে বিরল, আবার যথেষ্ট সময়–স্থান–সমান্তরাল পরীক্ষার ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর পরিমাণে জমা হয়।
I. কেন “কণিকার উৎস” আবার লিখতে হবে (বর্তমান ব্যাখ্যার সীমাবদ্ধতা)
- মূলধারার তত্ত্বগুলো পারস্পরিক ক্রিয়া ও মাপজোখের নিয়ম নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করে। তবে যখন জিজ্ঞেস করা হয়—স্থিতিশীল কণিকা কেন স্থিতিশীল থাকে, কোথা থেকে জন্ম নেয়, আর কেন মহাবিশ্ব স্থিতিশীল কণিকায় “ভরে উঠল”—তখন ব্যাখ্যাগুলো প্রায়ই সমতা, স্বীকার্য বা হিমায়ন/পর্যায়-রূপান্তরের স্থিরচিত্রে থেমে যায়; ধারাবাহিক উপাদান–প্রক্রিয়ার ছবি অনুপস্থিত থাকে।
- আরেকটি ফাঁক হলো “ব্যর্থতার সমুদ্র”কে অদৃশ্য ধরে নেওয়া: অধিকাংশ চেষ্টা টিকে না—এ কথাটি সোজাভাবে হিসাবের খাতায় লেখা হয় না। অথচ এই সত্যটিই বোঝায় কেন স্থিতিশীল কণিকা বিরল অথচ সর্বত্র বিদ্যমান।
II. অস্থিতিশীলতাই নিয়ম, ব্যতিক্রম নয় (পটভূমির সমুদ্র ও মূল হিসাব)
- তারা কী
শক্তির সমুদ্রে যখন উপযুক্ত তরঙ্গিততা ও টেনসরের অসামঞ্জস্য সৃষ্টি হয়, শক্তির সুতো স্থানীয়ভাবে সুশৃঙ্খল গঠন বানাতে কুণ্ডলী পাকাতে চায়। অধিকাংশ চেষ্টা “স্ব-ধারণ জানালা” (coherence window)-তে ঢুকে না; খুব অল্প সময় স্থায়ী হয়। এইসব স্বল্পস্থায়ী সুশৃঙ্খল তরঙ্গিততা ও সংকীর্ণ অর্থের অস্থিতিশীল কণিকাকে একত্রে বলি সাধারণীকৃত অস্থিতিশীল কণিকা (GUP); দেখুন অধ্যায় 1.10। এরপর থেকে আমরা সাধারণীকৃত অস্থিতিশীল কণিকা শব্দটাই ব্যবহার করব। - তারা কেন গুরুত্বপূর্ণ
একেকটি চেষ্টা দ্রুত মিলিয়ে যায়, তবু স্থান–কালের অগণিত চেষ্টার সমষ্টি দু’টি পটভূমি স্তর গড়ে তোলে:- পরিসংখ্যানগত টেনসর মাধ্যাকর্ষণ (STG): স্থায়ীকালের ক্ষীণ টানগুলো মাধ্যমে টেনসরের ওপর পরিসংখ্যানগতভাবে যোগ হয়ে মসৃণ, ভেতরের দিকে পক্ষপাত তৈরি করে—মহাকায় স্কেলে এটি “অতিরিক্ত দিকনির্দেশনা”র মতো কাজ করে।
- টেনসর স্থানিক শব্দ (TBN): গঠন ভাঙা/নিঃশেষনের সময় সমুদ্রে বিস্তৃত-ব্যান্ড, কম-সামঞ্জস্যের তরঙ্গপুঞ্জ ছড়িয়ে পড়ে; ফলে বিসরণের তল উঁচু হয় ও ক্ষুদ্র তরঙ্গিততা ইনজেক্ট হয়।
- “অদৃশ্য কাঠামো”
স্কেল বড় করলে যে কোনো ক্ষুদ্র আয়তনেই পরিমাপযোগ্য টান ও শব্দ-তল থাকে। গ্যালাক্সির মতো উচ্চ-টেনসর ভূভাগে এই অদৃশ্য কাঠামো আরও প্রবল, যা ধারাবাহিকভাবে গঠনগুলোকে টানে ও মসৃণ করে। স্থিতিশীল কণিকা এমনই এক সর্বব্যাপী ব্যর্থতার পটভূমিতে জন্ম নেয়।
III. স্থিতিশীল কণিকা বানানো এত কঠিন কেন (উপাদানভিত্তিক সীমা—সব একসাথে পূরণ করতে হবে)
একটি চেষ্টাকে দীর্ঘায়ু স্থিতিশীল কণিকায় “উন্নীত” করতে নীচের সবগুলি শর্ত একই সঙ্গে পূরণ থাকতে হবে—প্রত্যেকটি নিজে নিজেই সঙ্কীর্ণ, একত্রে আরও সঙ্কীর্ণ:
- টপোলজিক্যাল বন্ধন: সামগ্রিক লুপটি বন্ধ হতে হবে; ঢিলে প্রান্ত চলবে না, যা দ্রুত খুলে যাবে।
- টান-সমতা: বক্রতা–বিকৃতি–প্রসারণের টান স্ব-সাম্য থাকতে হবে; “অতিরিক্ত টাইট/অতিরিক্ত ঢিলা” কোনো মারাত্মক বিন্দু থাকবে না।
- ছন্দ-লক: লুপের বিভিন্ন অংশে সময়ের ছন্দ লক হতে হবে, যেন “তুমি ধাও, আমি পালাই” জাতীয় স্ব-ছিন্নতা না ঘটে।
- জ্যামিতিক জানালা: আকার–বক্রতা–রৈখিক ঘনত্ব একসঙ্গে কম-ক্ষয় ও বন্ধ-লুপের জানালায় পড়তে হবে; খুব ছোট হলে ছিঁড়ে যায়, খুব বড় হলে পরিবেশের কাঁচিতে ছিন্নভিন্ন হয়।
- পরিবেশ-নীচে-সীমা: চারপাশের শিয়ার/শব্দ নতুন লুপের সহনসীমার নিচে থাকতে হবে।
- ত্রুটি-স্ব-মেরামত: স্থানীয় ত্রুটির ঘনত্ব এত কম হবে যে অন্তর্নির্মিত প্রক্রিয়ায় তা নিজেই সেরে নিতে পারে।
- প্রথম কয়েক ঢেউ বাঁচতে হবে: সূচনালগ্নের প্রবলতম তরঙ্গিততা টপকে লুপকে দীর্ঘায়ু কক্ষপথে ঢুকতে হবে।
মূল কথা: আলাদা করে দেখলে কোনো শর্তই “আকাশছোঁয়া” নয়; কিন্তু একসাথে সব পূরণ হওয়ায় সাফল্যের হার অতি ক্ষুদ্র—এটাই স্থিতিশীল কণিকা বিরল হওয়ার গূঢ় কারণ।
IV. কতটা “অস্থিতিশীল পটভূমি” দরকার (অস্থিতিশীল পটভূমির সমতুল্য ভর)
মহাকায় স্কেলের “অতিরিক্ত দিকনির্দেশনা”কে একই পরিসংখ্যান পদ্ধতিতে সাধারণীকৃত অস্থিতিশীল কণিকা-র সমতুল্য ভরঘনত্বে অনুবাদ করলে পাই:
- মহাবিশ্ব-গড়: প্রতি 10,000 km³ আয়তনে প্রায় 0.0218 মাইক্রোগ্রাম সমতুল্য ভর।
- আকাশগঙ্গা-গড়: প্রতি 10,000 km³ আয়তনে প্রায় 6.76 মাইক্রোগ্রাম সমতুল্য ভর।
ব্যাখ্যা: মানে ছোট, কিন্তু সর্বব্যাপী; মহাজাগতিক জাল/গ্যালাকটিক গঠনের উপর এই স্তরটি “মসৃণ উত্তোলন” ও “সূক্ষ্ম মসৃণকরণ”-এর জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক বলের ভিত্তি জোগায়।
V. স্থিরচিত্রে ধাপসমূহ: একবারের চেষ্টা থেকে “দীর্ঘ জীবন” পর্যন্ত
- সুতো টেনে আনা: বহির্বিশ্বের ক্ষেত্র/জ্যামিতি/চালক শক্তির প্রভাবে সমুদ্রের তরঙ্গিততা সুতো-রূপে টেনে আনা হয়।
- গুচ্ছ ও পুনর-মিল: শিয়ার-ব্যান্ডে সুতোগুলো গুচ্ছবদ্ধ হয় ও পুনরায় মিলিত হয়ে ক্ষয় ধাপে ধাপে কমায়।
- বন্ধ-লুপ: বন্ধনের সীমা পেরিয়ে টপোলজিক্যাল লুপ গড়ে ওঠে।
- ফেজ-লক: কম-ক্ষয়ের জানালায় সময়ের ছন্দ ও ফেজ লক হয়।
- স্ব-ধারণ: টান-সমতা সম্পূর্ণ হয় এবং পরিবেশীয় স্ট্রেস-পরীক্ষা উত্তীর্ণ → স্থিতিশীল কণিকা।
ব্যর্থতার শাখা: যে কোনো ধাপে ব্যর্থ হলে গঠন সমুদ্রে ভেঙে মিশে যায়—স্থায়ীকালে পরিসংখ্যানগত টেনসর মাধ্যাকর্ষণ-এ যোগ হয়; ভাঙনের সময় টেনসর স্থানিক শব্দ ইনজেক্ট হয়।
VI. মাত্রার ক্রম: “দেখে বোঝা যায়” এমন সাফল্যের খতিয়ান
প্রক্রিয়াটি দৈবচয়নমূলক হলেও স্থূল স্কেলে মাপা যায়। মহাবিশ্ব-ব্যাপী মাত্রিক খতিয়ান (বিশদ বাদ; শক্তি-সুতো তত্ত্ব-সম্মত):
- মহাবিশ্বের বয়স: ≈ 13.8 × 10⁹ বছর ≈ 4.35 × 10¹⁷ s।
- দৃশ্যমান পদার্থের মোট ভর (মহাবিশ্ব): ≈ 7.96 × 10⁵¹ kg।
- অদৃশ্য পদার্থের মোট ভর (মহাবিশ্ব): পরিসংখ্যানগত টেনসর মাধ্যাকর্ষণ-এর প্রধান উৎস; দৃশ্যমান ভরের প্রায় 5.4×, অর্থাৎ ≈ 4.3 × 10⁵² kg।
- সাধারণীকৃত অস্থিতিশীল কণিকা-র স্বাভাবিক আয়ু-জানালা: 10⁻⁴³–10⁻²⁵ s।
- একক ভরে সমগ্র মহাজাগতিক ইতিহাসে তরঙ্গিততার সংখ্যা: প্রায় 4.3 × 10⁶⁰–4.3 × 10⁴² বার প্রতি কেজি–ইতিহাস।
- একবারের চেষ্টায় স্থিতিশীল কণিকায় “রূপান্তর”-এর সম্ভাবনা: প্রায় 10⁻⁶²–10⁻⁴⁴।
উপসংহার (মাত্রাগত অর্থ): একটি স্থিতিশীল কণিকার জন্মের পেছনে থাকে প্রায় 10¹⁸–10²⁴ কুইন্টিলিয়ন মাত্রার ব্যর্থ চেষ্টা; তাই একক-চেষ্টা হিসেবে তা অতি বিরল, কিন্তু স্থান–কাল–সমান্তরাল “তিনটি ঘাত-বৃদ্ধি” মিলিয়ে মোট ফলন স্বাভাবিকভাবেই বড় হয়।
VII. তবু মহাবিশ্ব কীভাবে “স্থিতিশীল কণিকায় ভরে ওঠে” (তিনটি প্রবর্ধক)
- স্থানীয় প্রবর্ধক: প্রারম্ভিক মহাবিশ্বে অগণিত সু-সমন্বিত ক্ষুদ্র ডোমেন ছিল—প্রায় সর্বত্র পরীক্ষানিরীক্ষা চলেছে।
- কালীয় প্রবর্ধক: গঠনের জানালা সরু হলেও সময়-ধাপ অত্যন্ত ঘন—প্রায় সবসময় চেষ্টা চলেছে।
- সমান্তরাল প্রবর্ধক: পরীক্ষা ধারাবাহিক নয়; অসংখ্য স্থানে একযোগে ঘটেছে।
এই তিন প্রবর্ধক অতি ক্ষুদ্র একক-সম্ভাবনাকে গুণ করে মোট উৎপাদন উল্লেখযোগ্য করে তোলে; স্থিতিশীল কণিকা তাই “স্বাভাবিকভাবেই জমে ওঠে”।
VIII. সহজবোধ্য সুফল (বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে এক ছবিতে আনা)
- বিরল কিন্তু স্বাভাবিক: একক-চেষ্টা কঠিন → বিরল; স্থান–কাল–সমান্তরাল প্রবর্ধন → স্বাভাবিক। কোনো বিরোধ নেই।
- ব্যর্থতাই বেসলাইন: সাধারণীকৃত অস্থিতিশীল কণিকা হলো স্থায়ী পটভূমি—নিরন্তর পরিসংখ্যানগত টেনসর মাধ্যাকর্ষণ (সমতলমুখী টান) তৈরি করে এবং টেনসর স্থানিক শব্দ (বিসরণের তল উঁচু করা) যোগ করে।
- “অদৃশ্য মাধ্যাকর্ষণ” কেন ব্যাপক: মহাকায় “অতিরিক্ত দিকনির্দেশনা” আসলে পরিসংখ্যানগত টেনসর মাধ্যাকর্ষণ-এর মসৃণ পক্ষপাত; এতে নতুন কোনো পদার্থ মান্য না করেই বহু প্রপঞ্চ ব্যাখ্যা হয়।
- “স্ট্যান্ডার্ড অংশ” কেন জন্মায়: একবার জানালায় “জমে গেলে” উপাদান-নিয়ম জ্যামিতি ও বর্ণালিকে অভিন্ন মাত্রায় বেঁধে দেয়—ইলেকট্রন মানেই ইলেকট্রন, প্রোটন মানেই প্রোটন।
IX. সংক্ষেপে
- মাতৃ-সমুদ্র আসলে ব্যর্থতার সমুদ্র: মহাবিশ্ব সাধারণীকৃত অস্থিতিশীল কণিকা-র ধারাবাহিক চেষ্টায় পূর্ণ; স্থায়ীকালে তা পরিসংখ্যানগত টেনসর মাধ্যাকর্ষণ-এ স্তূপিত হয়, ভাঙার সময় টেনসর স্থানিক শব্দ ইনজেক্ট করে।
- জমে যাওয়া কঠিন, তবে সম্ভব: বন্ধ-লুপ, টান-সমতা, ছন্দ-লক, জ্যামিতিক জানালা, নীচে-সীমা পরিবেশ, স্ব-মেরামত, প্রথম ঢেউয়ে টিকে থাকা—সব একসাথে পূরণ হলেই স্বল্পস্থায়ী চেষ্টা দীর্ঘায়ুতে “ঝাঁপ” দেয়।
- পড়তে সুবিধাজনক খতিয়ান: সমতুল্য ভরঘনত্ব (মহাবিশ্ব/আকাশগঙ্গা মানদণ্ড), সঙ্গে বয়স–আয়ু-জানালা–চেষ্টার সংখ্যা–সাফল্যের সম্ভাবনা—সবই দৃশ্যমান সংখ্যা দেয়।
- দৈনন্দিনের অলৌকিকতা: প্রতিটি স্থিতিশীল কণিকা অসংখ্য ব্যর্থতার ভেতর থেকে জন্ম নেওয়া এক অলৌকিক ফল; মঞ্চ যথেষ্ট বড় ও সময় যথেষ্ট দীর্ঘ হলে অলৌকিকতাই দৈনন্দিন হয়ে যায়—“সবকিছুর উদ্ভব” সম্পর্কে শক্তি-সুতো তত্ত্ব-এর ধারাবাহিক, পরিসংখ্যানভিত্তিক ও স্ব-সঙ্গত বর্ণনা এটাই।
স্বত্বাধিকার ও লাইসেন্স (CC BY 4.0)
স্বত্বাধিকার: অন্যথা উল্লেখ না থাকলে, “Energy Filament Theory” (পাঠ্য, সারণি, চিত্র, প্রতীক ও সূত্র)‑এর স্বত্বাধিকার লেখক “Guanglin Tu”‑এর।
লাইসেন্স: এই কাজটি Creative Commons Attribution 4.0 International (CC BY 4.0) লাইসেন্সের অধীনে বিতরণ করা হয়। যথাযথ স্বীকৃতির শর্তে বাণিজ্যিক বা অ‑বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কপি, পুনঃবিতরণ, অংশবিশেষ ব্যবহার, রূপান্তর ও পুনঃপ্রকাশ করা যাবে।
প্রস্তাবিত স্বীকৃতি বিন্যাস: লেখক: “Guanglin Tu”; কর্ম: “Energy Filament Theory”; উৎস: energyfilament.org; লাইসেন্স: CC BY 4.0.
প্রথম প্রকাশ: 2025-11-11|বর্তমান সংস্করণ:v5.1
লাইসেন্স লিংক:https://creativecommons.org/licenses/by/4.0/